Inhouse product
আখের গুড়_ Sugarcane molasses
আখের গুড় যেসব অঞ্চলে বেশি হয় :
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি আখ উৎপাদিত হয় নাটোর জেলায়। একক জেলা হিসেবে বাংলাদেশের ১৫ টি সরকারি চিনিকলের মধ্য এই জেলায় দুটি চিনিকল অবস্থিত। এছাড়াও রাজশাহী, পাবনা, চাপাই নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, পঞ্চগড় ইত্যাদি অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে আখ উৎপাদিত হয় এবং এসব অঞ্চলে উৎপাদিত আখ থেকে আখের গুড় তৈরি হয় ।
আখের গুড়ের সময় কাল:
আখ চাষ মূলত শীতকালে করলে ভালো হয়। উৎপাদিত আখের রস থেকে ১২০ থেকে ১৫০ মণ করে আখের গুড় পাওয়া যায়। তাছাড়া আখেঁর রস থেকে প্রত্যেক বছর প্রায় ১০০ মণ আধরসি পাওয়া যায়।
আখের জাত:
দানাদার গুড় উৎপাদনের জন্য পরিপূর্ণ পরিপক্ব আখ প্রয়োজন। উপযোগী জাতগুলো হলো- ঈশ্বরদী ১৬, ঈশ্বরদী ২৬, ঈশ্বরদী ৩০, ঈশ্বরদী ৩৩, ঈশ্বরদী ৩৮। প্রচলিত আখ মাড়াইকলের রস আহরণ ক্ষমতা ৪৫-৫০ ভাগ। বাংলাদেশে ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত উন্নত আখ মাড়াইকলের রস আহরণ ক্ষমতা প্রায় ৬০ ভাগ।
আখের গুড়ের প্রস্তুত প্রণালী :
প্রথমে আখ মাঠে থেকে কেটে নিয়ে আসা হয়। তারপর আখ ভালোভাবে ধুইয়ে পরিষ্কার করে মেশিনের সাহায্যে রস বের কারা হয়। এরপর চুলাতে দেওয়ার আগে রসটি ভালোভাবে ছেকে নেওয়া হয় । এরপরে ২-৩ ঘন্টা জাল দেওয়ার পরে রস জাল দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়। তারপরে চুলা থেকে নামিয়ে ১০ মিনিট রাখা হয় ঠান্ডা করার জন্য। গুর ঠান্ডা হওয়ার পর নাড়াচাড়া করা হয় গুড় শক্ত হওয়ার জন্য। সর্বশেষ মাটির পাতিলে বা গুড় রাখার পাত্রে গুড় ঢালা হয় সদ্য তৈরি গুড়।
গুড় প্যাকেজিং ও সংরক্ষণ :
গুড় প্যাকেটিং ও সংরক্ষণের জন্য কিছুক্ষণ সময় নিয়ে গুড় কিছুটা শিতল করতে হবে। শুকনা গুড়ের আর্দ্রতা শতকরা প্রায় ২-৪ ভাগে নেমে আসবে। এ অবস্থায় গুড় প্যাকিং করলে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। স্বচ্ছ পলিথিন প্যাকেটে দানাদার গুড় প্যাকিং করলে ভলো হয়। এভাবে শুকনো গুড় প্যাকিং করে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।
আখের গুড়ের উপকারিতা :
১। এতে থাকা শর্করা ওজন বৃদ্ধিতে কাজ করে।
২। ক্ষতিকর অনুজীব ধ্বংস করে।
৩। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
৪। গুড় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৫। রক্তস্বল্পতা দূর করে।
৬। সর্দি-কাশির সমস্যা দূর করে।
৭। নিয়মিত গুঁড় খাওয়া মাইগ্রেনের সমস্যা কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
৮। পানিবাহিত রোগে আখের গুঁড়ের স্যালাইন বেশ উপকারী।
আখের গুড়ের অপকারিতা :
চিনির তুলনায় স্বাস্থ্যকর হলেও গুড় যেহেতু মিষ্টি, তাই এটি অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াবেই। গুড় তৈরির পদ্ধতিতে ভুল হলে কিংবা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা না হলে সেই গুড় থেকে অন্ত্রে বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
আখের গুড়ের ব্যবহার :
গুড় ব্যবহার করা হয় মিষ্টি, পানীয়, চকলেট, ক্যান্ডি, টনিক, সিরাপ, শরবত, কেক পিঠা ইত্যাদি তৈরি করতে।
গুড়ের দাম :
যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে নিয়োমিত বিশুদ্ধ খাবার খান।
বিশুদ্ধতা মানেই সুস্থতা
আর সুস্থতা মানেই রসোবালি।