Inhouse product
কালোজিরা-Nigella sativa
কালোজিরার উৎপাদন কৌশলঃ শুকনা ও ঠাণ্ডা আবহাওয়া কালিজিরা আবাদে খুব অনুকূল। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আবহাওয়া বালাইয়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।
ফুল ফোটার সময় বৃষ্টি হলে কালিজিরার ফলন কমে যায়।
৩ থেকে ৪টি চাষ ও আড়াআড়ি মই দিয়ে মাটি ঝুরাঝুরা করে আগাছা পরিষ্কার করে জমি সমতল করে বীজ বপন করতে হয়।
অল্প পরিমাণ এক বিঘা বা তার কম জমিতে চাষ করলে ৫ সেন্টিমিটার বা ২ ইঞ্চি উঁচু বেড তৈরি করা ভালো।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাঃ কালোজিরা যেকনো অবস্থায়ই খাওয়া যেতে পারে। তবে পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে খেলে আরও ভালো হয়।
কারণ, কালোজিরা বীজে মাটির কণা বা অন্যান্য ময়লা থাকতে পারে, যা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা যায়। এতে বীজের গুণাগুণ ভালোভাবে শোষিত হয়।
আমরা এগুলো শুকিয়ে তারপর মাড়াই করে তেল বের করি।
কালোজিরা তেলের উপকারীতাঃ
কালোজিরার তেলে কমবেশি প্রায় ১০০টির বেশি উপাদান রয়েছে।
কালোজিরায় প্রায় ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি বিদ্যমান।
এতে আরও আছে আমিষ, শর্করা ও প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিডসহ নানা উপাদান। এছাড়াও এই তেলে অলিক এসিড,আয়রন,ভিটামিন এ,ভিটামিন বি, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম।
এর মধ্যে রয়েছে ফসফেট,লৌহ,ফসফরাস,কার্বোহাইড্রেট ছাড়াও জীবাণু নাশক বিভিন্ন উপাদানসমূহ।
কালোজিরার তেলের ব্যবহার বিধি:
নানাবিধ ক্ষেত্রে কালোজিরা তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।এ সকল ক্ষেত্রসমূহের কিছু উল্লেখ করা হলোঃ
> চুল পড়া বন্ধ করতেঃ চুল পড়া বন্ধ করতে এই তেল নিয়মিত মাথায় মালিশ করতে হবে, যার কারণে চুল পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে এবং চুল পড়া বন্ধ হবে।
> হজমের সমস্যা দূরীকরণে: কালোজিরা এক চা চামচ বেটে পানির সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন দুই তিনবার খেলে মোটামুটি এক মাসে মধ্যে মধ্যে হজমশক্তি বেড়ে যাবে।
পাশাপাশি পেট ফাঁপাভাবও দূর হবে।
> দেহের উন্নতিঃ নিয়মিত কালোজিরার তেল সেবনে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে সতেজ করে।
অরুচি, উদরাময়, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা,মাইগ্রেন,সর্দি,কাশি,হাঁপানি নিরাময়ে কালোজিরা অনেক সাহায্য করে থাকে।
তাছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কালোজিরা তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
> মাথা ব্যাথায় উত্তম ঔষধঃ কারো যদি মাথা ব্যাথা হয় তাহলে ১/২ চামচ কালোজিরা তেল মাথায় মালিশ করলে অনেক আরাম পাওয়া যায়।
এছাড়াও এই তেল মধুর সাথে মিশিয়ে খেলেও মাথাব্যাথা খুব দ্রুত কমে যায়।
> স্বাস্থ্য ভাল রাখতে: মধুসহ প্রতিদিন সকালে কালোজিরা সেবনে স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও সকল রোগ মহামারী হতে রক্ষা পাওয়া যায়।
> সর্দি সারাতেঃ এক চা-চামচ কালোজিরার সাথে তিন চা-চামচ মধু ও দুই চা-চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশি দূর হবে।
একই সাথে পাতলা পরিষ্কার কাপড়ে কালিজিরা বেঁধে নাকে শুকতে হবে, শ্লেষ্মা তরল হয়ে ঝরে পড়বে।
> বাতের ব্যাথা দূরীকরণেঃ বাতের ব্যথা হলে সেখানে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে কালোজিরার তেল মালিশ করতে হবে তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
> হার্টের সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যবহারঃ কালোজিরার তেল দিয়ে বুকে নিয়মিত মালিশ করতে হবে।
প্রতিদিন এক চামচ কালোজিরার সাথে এক কাপ দুধ মিশিয়ে দিনে দুইবার খেলে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
> ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখতেঃ প্রতিদিন সকালে রসুনের দুটি কোষ চিবিয়ে খেয়ে এবং সমস্ত শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করে সূর্যের তাপে কমপক্ষে আধা ঘন্টা বসে থাকতে হবে।
তাহলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রন রাখবে।
> যারা হাঁপানী বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমসসায় ভুগছেন। তাদের জন্য কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী।
প্রতিদিন কালোজিরার ভর্তা খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা উপশম করবে।
> যৌন শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রেঃ কালোজিরা নারী পুরুষ উভয়ের যৌনক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
প্রতিদিন কালোজিরা খাবারের সাথে খেলে পুরুষের স্পার্ম সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা তৈরি করে মধ্যপ্রাচ্যে প্রচলিত আছে যে, কালিজিরা যৌন ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে।
একচা-চামচ মাখন, এক চাচামচ জাইতুন তেল সমপরিমাণ কালোজিরার তেল ও মধুসহ দৈনিক ৩বার ৪/৫ সপ্তাহ ধরে খেলে অনেক উপকার হবে।
তবে পুরানো কালোজিরা তেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।
> মায়ের দুধ বৃদ্ধি করতেঃ মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে নিয়মিত কালোজিরার ভর্তা খেতে হবে তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
> অনিয়মিত মাসিক সারাতেঃ এক কাপ কাঁচা হলুদের রস বা সমপরিমাণ আতপ চাল ধোয়া পানির সাথে এক কাপ চা-চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে দৈনিক ৩বার করে নিয়মিত খেতে হবে।
তাহলে অনেক ভাল কাজ হবে।
>পিঠের ব্যাথা দূর করতেঃ কালোজিরার থেকে যে তেল বের করা হয় তা আমাদের দেহে বাসা বাঁধা দীর্ঘ মেয়াদী রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা কমাতে বেশ সাহায্য করে।
এছাড়াও সাধারণভাবে কালোজিরা খেলেও অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
> দাঁত ব্যথা দূরীকরণেঃ দাতের ব্যথা হলে কুসুম গরম পানিতে কালোজিরা দিয়ে কুলি করলে ব্যথা কমে যাবে।
কালোজিরা মুখের যেমন জিহ্বা, তালু, দাঁতের মাড়ির জীবাণু মেরে ফেলে।
যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে নিয়োমিত বিশুদ্ধ খাবার খান।
বিশুদ্ধতা মানেই সুস্থতা
আর সুস্থতা মানেই রসোবালি।